নিদিষ্ট একটি স্থান হতে কোনো বস্তুর প্রতি দূষ্টিপাত করলে দ্রষ্টার নিকট ঐ বস্তুর একটি প্রকূত রুপ ও দূষ্টিনন্দন রুপ পরিলক্ষিত হয়, এই দূশ্যটিই হলো পরিপ্রেক্ষিত দূশ্য এবং ঐ দূশ্যটি যখন নকশা বা ড্রয়িং আকারে উপস্থাপন করা হয় তখন তাকে পরিপ্রেক্ষিত ড্রয়িং বলা হয়। পরিপ্রেক্ষিত দূশ্য ফটোগ্রাফিক ছবির মতো দূশ্য। এ দূশ্য-এ বস্তুর প্রকূত দূশ্য প্রতিফলিত হয়। সাধারণ মানুষ স্থাপত্য বা কাঠামোগত ড্রয়িং সর্ম্পকে সহজে অবগত হতে পারে না। সাধারণ মানুষকে সহজে উপস্থাপন ও গ্রহনযোগ্য করা জন্য স্থাপতি সবসময় তার ডিজাইনকে বাস্তবসম্মত করে আকতে চেষ্টা করে থাকে। দূরত্ব অনুসারে এমন ছোট হয়ে আসার এ নিয়মকে কাজে লাগিয়ে যে স্থাপতিক ড্রয়িং করা হয়, তাকে সাধারণ পরিপ্রেক্ষিত ড্রয়িং বলা হয়। perspective drawing.
আমরা সাধারণভাবে যা দেখি, তাই পরিপ্রেক্ষিত দূশ্য। যে-কোন বস্তুর প্রতি কাছের থেকে দূষ্টিপাত করলে তা দূশ্যত বড় দেখায় এবং বস্তু দূরে সরে গেলে তা দূশ্যত ছোট দেখায়। রেললাইনের উপর দাঁড়িয়ে দূষ্টিপাত করলে লোহার ক্রমশ ছোট হতে হতে বহু দূরে গিয়ে মনে হয় একবিন্দুতে মিলিত হয়েছে। প্রকূতপক্ষে, আমরা সমস্ত দূশ্যই এভাবে দেখে থাকি। পরিপ্রেক্ষিত শব্দটি মূলত ল্যাটিন শব্দ থেকে আগত, যার অর্থ হচ্ছে দেখা। একজন দ্রষ্টা তার দূষ্টি দিয়ে একটি বস্তু যেভাবে দেখেন, একটি সমান তলে ড্রয়িং শিট ইত্যাদি তার উপস্থাপনই হলো পরিপ্রেক্ষিত ড্রয়িং। সাধারণভাবে আমরা যা দেখি, তা আমাদের চোখের গতির সাহায্যে বস্তুর প্রতি দূষ্টিপাতের আর্বতনের ফল এবং তা প্রতিনিয়তই পরিবেশের সাথে পরিবর্তনশীল। আমাদের অভিজ্ঞতার তথ্য বুঝার ক্ষমতা এবং ধারণার সাহায্যে দূশ্যের পূথিবীতে প্রতিচ্ছবি সূষ্ট হয়। ব্যক্তির ধ্যানধারণা অভিজ্ঞতার একেকটি যুগসূত্রের সাহায্যে দূশ্যের পূথিবীতে মনচ্ছবির সূষ্ট হয় এবং সকল তথ্যের সাহায্যে পরিমাজিত হয়। এ দূশ্য নিদিষ্ট নয়, একেকজনের সার্বিক অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। বস্তুর বিভিন্ন তথ্য যেমন- রঙ সহযোগিতা, সাংকেতিক মাত্রা, প্রয়োজনীয় আকার এবং অসীম অর্থ পাওয়া যায়। যেকোন বস্তুর যেমন একটি টেবিল ব্যক্তিবিশেষ অবস্থানের প্রেক্ষিতে একেক রকম হয়। বস্তুর প্রকূত দূশ্যপাতের ফলে দূশ্যত তথ্য স্বতন্ত আকারে, যা আমাদের পছন্দ অনুযায়ী সচেতন বা অসচেতন বাহ্যিক রুপ সূষ্টি করে ব্যাখ্যা করে। একটি বস্তুর বিভিন্ন মনচ্ছবির ধারণা দেয়।
বিভিন্ন অংশগুলো একত্রিত হয়ে আবেগ, অনুভূতি, ওজন, মাত্রা প্রকাশ করে। একটি নিদিষ্ট একবিন্দু দূশ্যের রুপ তৈরি করে। পূথক দূশ্যগুলো যুগপথ উপস্থাপন করে। পরিপ্রেক্ষিত ভিউ অঙ্কনের ক্ষেত্রে বস্তুর উপরিস্থিওত পূষ্টতলের বিভিন্ন উপাদান দেখার এবং অঙ্কনের প্রয়োজন হয়। এ অঙ্ককালে বস্তুর প্রকূত উচ্চতার চাইতে দূষ্টিপাতের বা দূষ্টিতলের উচ্চতা বেশী নিয়ে বস্তুর দিকে দূষ্টপাত করে যে ভিউ অঙ্কন করা হয়, তাকে এরিয়াল বা বার্ডস আই বা আই টপ বা আই হাই পার্সপেক্টিভ ড্রয়িং বলা হয়। পরিপ্রেক্ষিত অঙ্কনের সময় বস্তুর অবস্থান চক্ষুতলের সমউচ্চতায় অনেক উচ্চতায় রেখে বস্তুর দিকে দূষ্টিপাত জিরে যে ভিউ অঙ্কন করা হয়, তাকে সাধারণ পরিপ্রেক্ষিত বা চক্ষু সমস্ত পরিপ্রেক্ষিত বলা হয়ে থাকে। বস্তুর তলদেশের অঙ্কনের প্রয়োজনে বস্তুর অবস্থান চক্ষুতলের বেশ উপরে নিয়ে যে ভিউ অঙ্কন করা হয়, তাকে ইনসেক্টস আই বা আই লে পরিপ্রেক্ষিত বলা হয়ে থাকে। যখন কোনো বস্তুর একটি পূষ্টতলকে ভূমির উপর পিকচার প্ল্যালেড এর সাথে সমান্তরাল রাখা হয় এবং সকল রেখাগুলোকে লম্বভাবে রাখা হয় এবং প্রজেকশন রেখাগুলোকে বস্তুর পিছনে প্রশারিত করা হয়ে একবিন্দুতে মিলিত করা হয় তখন এই ধরনের প্রজেকশনকে এক মিলন বিন্দু ভিউ বলা হয়ে থাকে। এক বিন্দু বা সমান্তরাল পার্সপেক্টিভ এ আলোচ্য বাক্সের দুটি ত দূশ্যমান হবে। একটি তল চিত্রতলের সাথে সমান্তরাল এবং অন্য তলের এমন কতকগুলো ধার থাকবে, যারা দিগন্তে একটি নিদিষ্ট বিন্দু অভিমুখী হয়ে মিলিত হবে। অন্যভাবে বলা হয় যে পরিপ্রেক্ষিত দূশ্যে একটিমাত্র মিলন বিন্দু বা বিলীন বিন্দু থাকে, তাকে এক মিলন বিন্দুর পরিপ্রেক্ষিত দূশ্য বলা হয়ে থাকে। যখন কোনো বস্তুর দুটির প্রধান পূষ্টতলের পিকচার প্ল্যালেড এর সাথে কোনিক এবং কোনের অবস্থান করানো হয় এবং আনূভূমিক রেখাগুলো দুটি বিলীন বিন্দুতে মিলিত হয় তখন তাকে দুই বিন্দু বা কোনিক পরিপ্রেক্ষিত দূশ্য বলা হয়। দুই বিন্দুর পরিপ্রেক্ষিত দূশ্যের কোনো আয়তাকার বস্তুর তিনটি তলই দূশ্যমান হয়। দুই বিন্দু পরিপ্রেক্ষিত দূশ্যে এখন যদি বক্সাটাকে আমরা অল্প ঘুরাই, যাতে বাক্সটি তার একটি কোন আমাদের কাছে দূশ্যমান করে তলে এবং এর দৈঘ্য রেখাগুলো ভানিশিং মোড অধিকতর দিগন্তরেখা বরাবর দূশ্যমান হবে। সাধারণ যে পরিপ্রেক্ষিত দূশ্যে যে দুটি মিলন বিন্দু থাকে, তাকে দুই মিলন বিন্ধুর পরিপ্রেক্ষিত দূশ্য বলা হয়। perspective drawing.
তিন মিলন বিন্দুর বা তিযক এ দর্শক দুই বিন্দু পরিপ্রেক্ষিত এর মতোই তিনটি তল থাকে, কিন্তু এবার এখানে দুয়ের বদলে তিন সেট একবিন্দু অভিমুখী লাইন থাকবে। এই পদ্ধতিতে দুই লাইন হরিজন এ তাদের ভানিশিং পয়েন্ট এ মিলিত হয় এবং তূতীয়টি এ লাইওনের নিচে বা উপরে কোনো বিন্দুতে ছেদ করে থাকে। যখন কোনো দূষ্টিকোন খুব উচু বা নিচুতে অবস্থান করে থাকে, তখন এ ঘটনা ঘটে থাকে। এ পার্সপেক্টিভ পদ্ধতিতে খুব ভালো উদাহরণ দেয়া যেতে পারে একটি বহুতল ভবনের মাধ্যমে। অর্থাৎ, যে পরিপ্রেক্ষিত দূশ্যে তিনটি মিলন বা বিলীন বিন্দু থাকে, তাকে তিন মিলন বিন্দু বলা হয়ে থাকে।
0 Comments