অটোক্যাড ঃ CAD শব্দের অর্থ Computer Aided Drafting/Desig। বিভিন্ন কমান্ড প্রয়োগের মাধ্যমে ক্যাডের কাজ সম্পূর্ণ হয়। এর সাহায্যে আমরা নতুন নতুন ড্রাইং তৈরি করতে পারি, এডিট করতে পারি, এবং সংরক্ষণ করতে পারি। অন্যান্য কম্পিউটার প্যাকেজ প্রোগ্রামের মতোই এটিও একটি প্যাকেজ প্রোগ্রাম। বিভিন্ন ধরণের 2D, 3D ড্রাইং CAD এর সাহায্যে সহজে তৈরি করা যায়। তাছাড়াও এতে আছে বিশাল আকূতির ড্রাইং শীট, বিভিন্ন কালারে পেইন এবং বিভিন্ন মেজারমেন্ট টুলস প্রভূতি। অটোক্যাড বিশ্বব্যাপী একটি ইঞ্জিনিয়ারিং পাওয়ারফুল ডিজাইন সফটওয়্যার। ১৯৮০সালে আমেরিকান অটোডেস্ক ইঙ্ক কোম্পানি অটোক্যাড তৈরি করেন। যেকোনো স্কেলিং ড্রাইং এর ক্ষেত্রে অটোক্যাড এর কোনো বিকল্প নেই। অটোক্যাড এর নতুন নতুন টুলস কমান্ড একদম ইউজার ফ্রেন্ডলি।
অটোক্যাড সফটওয়্যার চালুকরণ ঃ কম্পিউটার চালু করার পর অটোক্যাড আইকনের উপর মাউস পয়েন্টার রেখে মাউসের বাম বাটনে পরপর দুবার ক্লিক করতে হবে। তারপর সফটওয়্যার চালু হওয়ার পর অটোক্যাড আইকনের উপর মাউস পয়েন্টার রেখে মাউসের ডান বাটনে ক্লিক করলে একটি পুলমেনু আসবে, পুলমেনু হতে Open এ ক্লিক করতে হবে।
Autodesk
অটোক্যাড গ্রাফিক্স স্ক্রীন ঃ অটোক্যাড চালু করার পর অটোক্যাড ড্রাইং স্ক্রীন উইন্ডো প্রদশিত হয়। এটি একটি গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস, যাতে ব্যবহারকারী ড্রইং করতে পারেন।
১। টাইটেল বার ঃ অটোক্যাড গ্রাফিক্স উইন্ডোর সর্ব উপরের বারটিকে টাইটেল বার বলা হয়। এই বারে ড্রাইং ফাইলের নাম প্রদশিত হয়। টাইটেল বারের সর্ব বামে অটোক্যাড লোগো থাকে।
২। মেনুবার ঃ মেনুবারের অবস্থান টাইটেল বারের নীচে। মেনুবারে ড্রপ ডাউন মেনু থাকে। যেমনঃ File, Edit, View, Insert, Format ইত্যাদি।
৩। স্ট্যান্ডার্ড টুলবার ঃ মেনুবারের নীচের বারের নাম নাম হলো স্ট্যান্ডার্ড টুলবার। স্ট্যান্ডার্ড টুলবারের যেকোনো আইকনে ক্লিক করে উক্ত আইকনটি সক্রিয় করা যায়।
৪। অবজেক্ট প্রপার্টিজ টুলবার ঃ স্ট্যান্ডার্ড টুলবারের নীচের বারটির নাম অবজেক্ট প্রপার্টিজ টুলবার। এই টুলবারে ড্রপ ডাউন লিস্ট আছে। বিভিন্ন লেয়ার এই টুলবার থেকে ব্যবহার করা হয়।
৫। ড্র টুলবার ঃ ড্র টুলবারের অবস্থান গ্রাফিক্স ইন্টারফেস উইন্ডোর বামপাশে। ড্র টুলবারে অঙ্কন করার জন্য সাধারণত ব্যবহ্যত কমান্ডগুলো আইকন আকারে থাকে। প্রয়োজনীয় আইকনটিকে ক্লিক করে অতি দ্রুত কমান্ড কার্যকর করা যায়।
৬। মডিফাই টুলবার ঃ অটোক্যাড এ ড্রাইং সম্পাদনের জন্য মডিফাই টুলবার ব্যবহার করা হয়। মডিফাই টুলবারে অবস্থান গ্রাফিক্স উইন্ডোর ডান পাশে।
৭। ড্রাইং এডিটর ঃ গ্রাফিক্স উইন্ডোর মাঝের খালি উইন্ডো স্ক্রীনকে ড্রইং এডিটর বলা হয়। মূলত এটি হল অটোক্যাড সফটওয়্যার দারা ব্যবহ্যত কাগজ। ডিফেল্ড অবস্থায় এই স্ক্রীনের রঙ কালো থাকে।
৮। কমান্ড উইন্ডো ঃ ড্রইং স্ক্রীনের নীচের দিকে কমান্ড উইন্ডো প্রদশিত হয়। যেকোনো কমান্ড ব্যবহারের সময় কাজের ধারাবাহিকতা এবং ফলাফল দেখানোর জন্য এটি খুবই কার্যকর। যেকোনো কমান্ড ব্যবহারের সময় কেউ যদি কমান্ড উইন্ডোতে ধারাবাহিকভাবে প্রদশিত লেখার সঠিক অনুসরণ করে তবে অতি সহজেই অটোক্যাডের সাহায্যে নিজের কাঙ্গিত ড্রাইং তৈরি করতে পারবে।
ইউসিএস(UCS) আইকন ঃ ইউজার কো-অর্ডিনেট সিস্টেম(User Co-Ordinate System) এর সংক্ষিপ্ত হচ্ছে UCS। এই আইকনটি ড্রইং এডিটরের বাম পাশে অবস্থিত। ডিফেল্ড অবস্থায় এটি এবং টপ ভিউ অবস্থায় এটি প্রদশিত হয়ে থাকে।
১০। স্ট্যাস্টাস বার ঃ ড্রই স্ক্রীনের কমান্ড স্ক্রীনের নীচের দিকে স্ট্যাস্টাস বার প্রদশিত হয়। স্ট্যাস্টাস বারে Snap, Grid, Ortho, Polar, Osnap, Ortack, LWT, Model ইত্যাদি বাটন থাকে। যেকোনো বাটনে ক্লিক করে উক্ত কমান্ডটিকে কার্যকর করা যায় এবং পুনরায় ক্লিক করে কার্যকারিতা বন্ধ করে দেওয়া যায়।
১১। মডেল ও লে-আউট ট্যাব ঃ আনুভূমিক স্ক্রলবারের বাম পাশ্বে তিনটি ট্যাব আছে। মডেল ট্যাবটি ডিফেল্ড অবস্থায় থাকে। আমরা মূলত ড্রাইং মডেল অবস্থায় করে থাকি। লে-আউট ট্যাব পিন্টিং অথবা প্যাট এর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
১২। শীট সেট ম্যানেজার ঃ অনেক ফাইল বা অনেক ড্রইং সমূহ শীট সেট ম্যানেজারের সাহায্যে অতি সহজেই সম্পাদন করা যায়। ইচ্ছে করলে শীট সেট ম্যানেজার অপশনটি ক্লোজ বাটন ক্লিকের মাধ্যমে ক্লোজ করে রাখা যায়।
১৩। টুল প্যালেটস ঃ টুল প্যালেটসে কিছু নান্দনিক হ্যাচ প্যার্টান, ব্লিট ইন ফার্নিচার ড্রইং দেওয়া থাকে, যা অতি সহজেই ড্রইং এ ইনসার্ট করা যায়। ইচ্ছে করলে টুলস প্যালেটস অপশনটি ক্লোজ বাটন ক্লিক এর মাধ্যমে ক্লোজ করে রাখা যায়।
১৪। এপ্লিকেশন মেনু ঃ অটোক্যাড গ্রাফিক্স উইন্ডোর সর্ব উপরের বাম পাশ্বে বাটনটিকে এপ্লিকেশন মেনু বলা হয়। এটি একটি ড্রপ ডাউন মেনু। এর মধ্যে New, Open, Save, Save As, Export, Publish, Print, Drawing Utilities, Close এই অপশন গুলো থাকে। এই মেনুতে অটোক্যাড এর লোগোও থাকে।
১৫। রিবন ঃ রিবনের অবস্থান কুইক এক্সিস টুলবারের নীচে। রিবনের মধ্যে সাব-মেনু থাকে। রিবনের প্রধান অপশনগুলো হল- Home, Insert, Annonate, Parametric View, Manange, Output, Ad-ins, Autodesk 360, Express Tool, BIM 360, Featured Apps ইত্যাদি।
১৬। ভিউপোর্ট কন্টোল ঃ এই অপশনগুলোর অংশগুলো হল – Viewport Contorls, View Contorls, Visual Style Contorls, ড্রইংকে শীটের মধ্যে বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত করার সুবিধার্থে এই অপশনগুলো ব্যবহার করা হয়।
১৭। প্রপার্টিজ প্যালেট ঃ এই অপশনের মাধ্যমে কোনো ড্রইং এর সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্য প্রদশিত হয়। অর্থাৎ এই প্যালেটি যদি অন থাকে, তবে যেকোনো লাইন সেলেক্ট করলে সেখানে তার পরিমাপ, ধরণ প্রভূতি সর্ম্পকিত সকল তথ্য প্রদশিত হবে। যেকোনো ধরণের এডিট কাজ সম্পাদনের সময় এই অপশনের ব্যবহার করা যেতে পারে। CAD
গ্রাফিক্স উইন্ডোর মাঝের খালি স্ক্রীন কে ড্রইং উইন্ডো বলা হয়ে থাকে। মূলতঃ এটিই হলো অটোক্যাড সফটওয়্যার এর দ্বারা আর্কার জন্য কাগজ। সাধারণ অবস্থায় এই স্ক্রীনের রঙ কালো হয়ে থাকে। ড্রইং উইন্ডো বা অটোক্যাড ড্রইং শীটের উপরের ডান প্রান্তে ভিউ কিউব এর অবস্থান। একটি ড্রইংকে বিভিন কোণিক অবস্থান থেকে দেখার সুবিধার্থে এই অবশনের ব্যবহার করা হয়। উপরের ট্যাবটি ডিফেল্ড অবস্থায় চালু থাকে। ত্রি-মাত্রিক ড্রইং এর ক্ষেত্রে এর কাজ সবচেয়ে বেশী ব্যবহার হয়ে থাকে। এইসবই হলো অটোক্যাড সর্ম্পকিত জানা-অজানা নানান তর্থ্য। আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করতে পারেন। আর আমাদের পোস্টটি ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট শেয়ার করে আমাদের পাশে থাকতে পারেন। এই বলে আজকের পোস্টটি এই খানেই শেষ করছি।
0 Comments